জুলাই গণহত্যার শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিরা মঙ্গলবার সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের পদত্যাগ দাবি করছেন।
সকালে সাড়ে ১১টার দিকে তারা প্রথমে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ দেখান। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের ২ নম্বর ফটকের সামনে পৌঁছে অবস্থান নেন, যার কারণে সচিবালয়ের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিরা নানা স্লোগান দেন। তাদের দাবির মধ্যে ছিল—“পদত্যাগ চাই, আসিফ নজরুলের পদত্যাগ চাই”, “খুনিরা বাইরে ঘোরে, বিচার বিভাগ কী করে”, “আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে”, “আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না” ইত্যাদি।
শহীদ পরিবার ও আহতরা অভিযোগ করেন, অর্থের বিনিময়ে জুলাই গণহত্যার আসামিরা জামিন পাচ্ছেন। আইন উপদেষ্টা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তাঁরা বিচারকদের অপসারণেরও দাবি জানান।
শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা বুলবুল করিম বলেন, “এক বছর পরেও আমার সন্তানের হত্যার বিচার পাইনি। সরকার বিচারের নামে তামাশা করছে। আসামিরা অর্থ দিয়ে জামিন পাচ্ছে, অথচ আইন উপদেষ্টা নিরব।”
শহীদ তায়িমের ভাই রবিউল আউয়াল বলেন, “আমরা এই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করছি।”
শহীদ শেখ শাহরিয়ারের বাবা আবদুল মতিন বলেন, “বিচারের জন্য আমরা দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আইন মন্ত্রণালয়ের আশ্রয় নিলেও প্রহসন চলছে।”
আহত আমিনুল ইসলাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “জুলাই আহতরা আবার রাস্তায় নামলে পরিণাম ভালো হবে না। আমরা কাউকে ভয় পাই না।”
শহীদ আলভীর বাবা আবুল হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে। অথচ আজও আমাদের ন্যায্য দাবির জন্য রাস্তায় নামতে হচ্ছে।”
এর আগে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় শহীদ পরিবার ও পুলিশের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
শহীদ আহনাফের মা সাফাত সিদ্দিকী অভিযোগ করে বলেন, “পুলিশ আমাদেরকে লাথি দিয়েছে, গালিগালাজ করেছে। আমরা ন্যায্য দাবি নিয়ে এসেছি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”