চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে তিন কিশোরকে চোরের অভিযোগে সেতুর রেলিংয়ে বেঁধে একদল যুবক বেধড়ক মারধর করেছে। মারধরে ঘটনাস্থলেই একজন কিশোরের মৃত্যু হয়।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চেইঙ্গার সেতু এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ বলছে, পূর্বের বিরোধ থেকে হয়তো চোর সন্দেহের নাটক সাজিয়ে পেটানো হয়েছে ওই তিন কিশোরকে।
নিহত কিশোরের নাম মো. রিহান মহিন (১৫)। সে একই গ্রামের সাগর আলী তালুকদার বাড়ির মুদিদোকানি মুহাম্মদ লোকমানের ছেলে। পরিবারের বরাত দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মহিন তার বন্ধুদের নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফিরছিলেন। পরে পরিকল্পিতভাবে ‘মব’ করে পেটানো হয়েছে তাকে ও তার বন্ধুদেরকে। এ ঘটনায় রিহানের দুই বন্ধু মুহাম্মদ মানিক ও মুহাম্মদ রাহাত গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নিহত রিহান তার বাবার মুদিদোকানে সহযোগী হিসেবে কাজ করত। গতকাল সে তার দুই বন্ধুকে নিয়ে চট্টগ্রাম নগরে বেড়াতে যায়। রাতে তারা বাড়ি ফিরছিল। তিনটার দিকে বাড়ির কাছে এলে আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা সাত থেকে আটজন যুবক তাদের চোর আখ্যা দিয়ে ধাওয়া দেয়। এরপর এ তিনজন দৌড়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে ওই যুবকরা মাহিন ও তার বন্ধুদের ধরে সেতুর ওপর নিয়ে যায়। এরপর তিন কিশোরকে রশি দিয়ে বেঁধে লোকজন জড়ো করে বেধড়ক মারধর করে তারা। এতে ঘটনাস্থলেই রিহানের মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা গুরুতর আহত মানিক ও রাহাতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। আর দুপুরে রিহানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আহমদ বলেন, ওই তিন কিশোর নগরে বেড়াতে গিয়ে মধ্যরাতে বাড়ি ফিরছিল। কেন, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। পরিবারকে মামলা করতে বলা হয়েছে। মূল হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
ওসি আরও বলেন, একই গ্রামের যুবকেরা হামলা করায় এটিকে চুরির ঘটনায় গণপিটুনি বলে মনে হচ্ছে না। তাদের মধ্যে হয়তো পূর্বের কোনো বিরোধ বা শত্রুতা ছিল।